আজ ৭ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জাতির উদ্দেশে যা বললেন তারেক রহমান

Spread the love

অনলাইন ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা। এরপর থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে চলছে বিজয়োল্লাস। এর পাশাপাশি গণভবন ও সংসদ ভবনেও ঢুকেতছনছ ও জিনিসপত্র নিয়ে যাচ্ছে জনগণ। এমন পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

আজ সোমবার রাতে এক ভিডিও বার্তায় তারেক রহমান বলেন, ‘গৌরবজনক ঐতিহাসিক এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সাহসী ছাত্র জনতাকে বিরোচিত অভিনন্দন জানাচ্ছি। হাজারো শহীদের প্রাণের বিনিময়ে জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে গণহত্যাকারী খুনি হাসিনার পতন হয়েছে। রাহুমুক্ত হয়েছে প্রিয় বাংলাদেশ। চূড়ান্তভাবে সফল হয়েছে লাখো শহীদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশ। এই ঐতিহাসিক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে আবারো প্রমাণিত হয়েছে দল-মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ থাকলে এই বাংলাদেশকে কেউ কখনো পরাজিত করতে পারবে না।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিজয়ের এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে আমি আজ সেইসব মায়েদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই, এই গণবিপ্লবে যারা তাদের প্রিয় সন্তান হারিয়েছেন। এভাবে গত ১৫ বছরে ফ্যাসিবাদী শাসনকালে তারা প্রিয়তম পিতা হারিয়েছেন, অনেক স্ত্রী-স্বামী হারিয়েছেন: গুম, খুন, অপহরণ করে অসংখ্য মায়ের বুক খালি করে দেওয়া হয়েছে। আপনাদের সন্তানের শহীদি মৃত্যু, স্বজনদের ত্যাগ, তিতিক্ষায় ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আরেকটি বিজয় দেখেছে বাংলাদেশ।’

তিনি বলেন, ‘জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লব সফল করতে গিয়ে অসংখ্য ছাত্র—জনতা আহত হয়েছেন। বাসায়, হাসপাতালে কিংবা ক্লিনিকে যন্ত্রনাবিদ্ধ সমস্ত সময়ে ভালোবাসা নিয়ে আপনাদের পাশে আজ সারা বাংলাদেশ।’

তারেক রহমান বলেন, ‘খুনি হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে অনেক মানুষ মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারের শিকার হয়েছেন, কারাগারে নিক্ষিপ্ত হয়েছেন, অবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং তাদের কারামুক্তির দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে আবারও স্বাভাবিকভাবে হলে, হোস্টেলে, ক্লাসে ফিরতে পারে এবং পরীক্ষায় অংশ নিতে পারে। আশা করি সরকার সবার আগে সেই পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’

দেশবাসীর উদ্দেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশের ১৮ কোটি মানুষকে জিম্মি করে, সাড়ে বারো কোটি ভোটারের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে, বাংলাদেশকে তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছিল। গণহত্যাকারী খুনি হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে জনগণ তাদের লুণ্ঠিত গণতন্ত্র, মানবাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথ সুগম করেছে। এরপর একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যেদিন বাংলাদেশের সাড়ে বারো কোটি ভোটার নিরাপদ, নিশ্চিন্তে ভোট দিয়ে জনগণের কাছে জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবে, রাষ্ট্র, সরকার, শাসন, প্রশাসনে সাম্য মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে পারবে, সর্বোপরি একটি গণতান্ত্রিক বৈষম্যহীন রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে তখনই জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের চূড়ান্ত সফলতা আসবে।’

তিনি বলেন, ‘জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবকে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে তাই যথা সম্ভব দ্রুততম সময়ের মধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। একটি বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য বিএনপিসহ বাংলাদেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সহযোগিতা করবে।’

তারেক রহমান বলেন, ‘এবার আপনাদের কাছে আমি একটি বিনীত আহ্বান রাখতে চাই, বিজয়ীর কাছে পরাজিতরা নিরাপদ থাকলে বিজয়ের আনন্দ মহিমান্বিত হয়। সুতরাং বিজয়ের এই আনন্দঘন সময়, রাহুমুক্তির এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত শান্তভাবে উদ্যাপন করুন। অনুগ্রহ করে কেউ প্রতিরোধ প্রতিশোধ কিংবা প্রতিহিংসাপরায়ণ হবেন না। কেউ নিজের হাতে আইন তুলে নেবেন না। অর্জিত বিজয় যাতে লক্ষ্যচ্যুত না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক এবং সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য আপনাদের প্রতি আহ্বান।’

তিনি বলেন, ‘৫২, ৭১ কিংবা ৯০-এর মতো ছাত্র-জনতা আবারও একটি বিজয়ের ইতিহাস রচনা করেছে। প্রিয় দেশবাসীকে আবারও বিরোচিত অভিনন্দন। আল্লাহ হাফেজ, বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি জিন্দাবাদ।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর